শেখ শাহিনুল হক শাহীন নামের যেই ব্যক্তি গতরাতে খুন হয়েছেন। তিনিই শীর্ষ চরমপন্থি নেতা ‘বড় শাহীন’। প্রয়াত শীর্ষ সন্ত্রাসী টাইগার খোকনের শিষ্য।
গতবছর ৫ আগস্ট গণঅভুত্থ্যানের পর ০৭ সেপ্টেম্বর প্রথম লিখি বড় শাহীন এলাকায় ফিরেছে। দেয়ানাসহ আশপাশ এলাকায় রীতিমতো সালিশ-বিচার শুরু করেছেন। কোমর ভাঙা পুলিশ বাহিনী তার ওজন তখনও বুঝতে পারেনি।
এলাকায় ফেরা অন্য সব সন্ত্রাসীর চাইতে তার উগ্রতা ছিল সবচেয়ে বেশি। যে কারণে তাকে নিয়ে আতংকে থাকতেন স্বাভাবিক জীবনে ফেরা অন্য চরমপন্থিরা।
সাবেক কাউন্সিলর টিপু খুনের পর ১২ জানুয়ারি লিখেছিলাম চরমপন্থিরা আতংক তৈরি করছে এলাকায়। যেটা লেখা হয়নি, তা হচ্ছে ভাগাভাগি এবং বিচার শালিশ নিয়ে নিজেদের মধ্যে যে কোনো সময় আরেক দফা খুনোখুনিতে জড়াতে পারেন তারা।
টিপু খুনের কারণ, কারা জড়িত এসব নিয়ে বিস্তারিত সব তথ্যই ছিল, কিন্তু প্রিয় মানুষদের অনুরোধে আর কিছু লেখা হয়নি। পরে অবশ্য টিপু হত্যা মামলায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
তখন ভয়ংকর একটা দিক তুলে ধরতে চেয়েছিলাম, পুরাতন চরমপন্থিরা আগের ফর্মে নেই। অস্ত্র বা জনবল তৈরি করতে তারা এলাকার কিশোর গ্যাং ও উঠতি সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করছে। এটাই ভয়ংকর। পুরাতন চরমপন্থিদের নেটওয়ার্ক, যোগাযোগ কাজে লাগাচ্ছে ছোটরা। যার কারণে অল্প দিনেই দামি ও ভারী অস্ত্রের মজুদ জমা হয়েছে তাদের হাতে।
হুজি শহীদ হত্যায় ওই সময়ের সব সন্ত্রাসীকে আসামি করা হয়েছে। তবে সব আসামি হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলেন না। নিউজ হলেই হুজি শহীদ হত্যার আসামি উল্লেখ করাটা ছেলেমি।
রাত থেকেই আফসোসে ভুগছি। আরও কিছু লেখা উচিত ছিল। ঘটনা ঘটার পর লিখে কি বা হবে!
চরমপন্থি ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে পরপর তিনটা বড় রিপোর্ট করার পর প্রিয় মানুষ, পরিবার থেকে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে এতোবার অনুরোধ করেছেন, এমনভাবে করেছে সেই অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারিনি। প্রয়াত রশিদ খোকন ভাইয়ের দুই বন্ধুও আমাকে ফোন করেছিলেন।
সত্য প্রকাশের বিষয়ে হুমকি বা রক্তচক্ষু দেখিয়ে অতীতে কেউ কাবু করতে পারেনি, পারবেও না ইনশাআল্লাহ। কিন্তু স্নেহ ভালাবাসা ভরা দাবি এড়ানো আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। সেই মনবেদনায় ভুগছি।
(রিপোর্টার, দৈনিক সমকাল, খুলনা ব্যুরো)।
খুলনা গেজেট/এনএম